রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ ২৪ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে ভারতের মুসলমানদের উপর জুলুম নির্যাতনের ক্ষেত্র তৈরি লক্ষ্যে মধুখালিতে উগ্রবাদিরা দুই সহোদরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। মুসলমানরা অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, ফলে মোদির ম্যাজিক কাজে আসেনি। মোদি ম্যাজিক দেখিয়ে ভারতের মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাতে চেয়েছিল। সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে ভারতের গোলামির জিঞ্জিরে দেশকে আবদ্ধ করেছে। ফলে উগ্রবাদিরা পূজায় দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে। মন্দিরে অগ্নিসংযোগকারীদেরকে কেন মিডিয়ার সামনে আনা হচ্ছে না, তাহলে কী হিন্দুরাই মন্দিরে আগুন দিয়ে মুসলমানদের উপর দোষ চাপিয়ে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত? ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, মন্দিরে আগুন দেয়ার অজুহাতে বিনা বিচারে দুই সহোদর হাফেজে কুরআন শ্রমিক হত্যাকান্ডের ঘটনা পরিকল্পিত। খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। জুলুম নির্যাতন করে ঈমানদারদের দমানো যাবে না।
শুক্রবার (৩ মে) বাদ আসর ডিআইটি চত্বরে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে ফরিদপুরের মধুখালিতে কতিপয় উগ্র সন্ত্রাসী কর্তৃক নিরীহ হাফেজে কুরআন দুই সহোদর শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ। জেলা সভাপতি মওলানা দ্বীন ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, নগর সেক্রেটারি মুহা. সুলতান মাহমুদ, সহ সভাপতি, মুহা. নুর হোসেন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ নগর সভাপতি মাও. হাবিবুল্লাহ হাবিব, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা ও নগর সভাপতি যথাক্রমে মুহা. যোবায়ের হোসেন ও রবিউল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা ও নগর সভাপতি যথাক্রমে মুহা. আশ্রাফ আলী ও মুহা. ওমর ফারুক সহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ। প্রচন্ড তাবদাহের মধ্যে ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঈমানদার জনতা রাজপথে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং খুনিদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।
মুফতী মাসুম বিল্লাহ বলেন, স্বাধীনতা পূর্বে পাকিস্তানীরা এদেশের জনগণের অধিকার ভুলুন্ঠিত করেছিলো। এখন আওয়ামী লীগ জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ন্যায় বিচার নেই, চিকিৎসা নেই, নিরাপত্তা নেই, চাকুরী নেই। জুলুম-বঞ্চনার শিকার মানুষ। এখনও চরম বৈষম্য সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। সকল সুযোগ-সুবিধা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের জন্য। তাহলে স্বাধীনতার মানে কী? ধর্ষণ সেঞ্চুরী পালন করা হয়, স্বামীকে বেধে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়, হাত-পা বেধে নির্মমভাবে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়। ভোটাধিকার নেই, জানমাল, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। তাহলে পাকিস্তানীদের মধ্যে আর বর্তমান সরকারের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? উগ্রবাদি হিন্দুরা মুসলমানদের পিটিয়ে হত্যা করে সরকার তাদের সমর্থন করে। খুনিদের বিচার করে না। মোদির দালালি করে বেশি দিন টিকে থাকা যাবে না।
জেলা সভাপতি আরও বলেন, সরকার মধুখালির ঘটনায় খুনিদেরকে দেশত্যাগে সুযোগ করে দিয়ে উপরে উপরে বিজ্ঞাপন দিয়ে জনগণের চোখে ধুলা দিচ্ছে। সরকার শিষ্টের দমন, দুষ্টে লালন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, মন্দিরে হামলার বিচার আমরাও চাই। কিন্তু বিনা বিচারে দুই শ্রমিক সহোদরকে পিটিয়ে হত্যার বিচার করতে ব্যর্থ হলে সরকারের বিরুদ্ধে জনতার রুদ্ররোষ সুষ্টি হলে আখের রক্ষা হবে না। তিনি বলেন, ভারতের চাপে শিক্ষায় আমুল পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষাকে শেষ করে দিয়েছে। শিক্ষার সকল অসঙ্গতি দূর করে মুসলিম চিন্তা চেতনার আলোকে শিক্ষা কারিকুলামকে ঢেলে সাজাতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে জেলা সভাপতি বলেন, সরকার ইসলামকে মাইনাস করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে। উগ্রবাদিরা হিন্দুরা সন্ত্রাসীরা দুই মুসলমান হাফেজে কুরআন শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা পরিকল্পিত। প্রশাসন কোনভাবে দায় এড়াতে পারবে না। সন্ত্রাসীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত জনতার আন্দোলন চলবে। পীর সাহেব চরমোনাই নির্দেশ করলে যে কোন ত্যাগ ও কুরবানীর জন্য জীবনের শেষ রক্তবিন্দুটুকুও বিলিয়ে দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
Leave a Reply