নাসিক নির্বাচনে নৌকার পক্ষে মাঠে নামার ঘোষণা শামীম ওসমানের

রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ ২৪ : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের মেয়র পদপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে নৌকার প্রচারে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ এ কে এম শামীম ওসমান।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বাধন কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। উক্ত সংবাদ সম্মেলনকে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের একটি সংবাদ সম্মেলন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংসদ শামীম ওসমান বলেন, কলাগাছ না আমগাছ সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। বিষয় একটাই আর এটা আমার স্বাধীনতার প্রতিক নৌকা, এটা আমার জাতির পিতার প্রতিক নৌকা, এটা আমাদের শেখ হাসিনার নৌকা, এটা আমাদের রক্ত দিয়ে কেনা প্রতিক নৌকা। এই নৌকার বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। নৌকার জন্য যেভাবে নামা উচিত সেভাবে নামতে পারিনি। আমি নৌকার বিরুদ্ধে না, আজ থেকে নৌকার হয়ে মাঠে নামলাম আমি।

তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ নৌকার ঘাঁটি, নারায়ণগঞ্জ শেখ হাসিনার ঘাঁটি, নারায়ণগঞ্জ বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি, নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ঘাঁটি, এখানে অন্য খেলা খেলার চেষ্টা করবেন না। কোনও দল-মতের কারণে রাজনীতিতে আসিনি। রাজনীতি করতে এসেছি জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সেটা হয়ে গেছে। রাজনীতি করতে এসেছি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে। আমরা যখন জাগবো অন্যরা তখন ঘুমাবে। আমাদের রক্ত মুক্তিযোদ্ধার রক্ত। বঙ্গবন্ধু আমাদের শেষ ঠিকানা। আমি কারও সামনে মাথা নত করি না। আমি নিজেই ঝড়, এই ঝড় কারও সামনে মাথা নোয়ায় না। আমি সত্য কথা বলতে পছন্দ করি। কিন্তু সব সত্য তো আর বলতে পারবো না। সেজন্য আমি আমার বিবেকের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য। এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। আমি এই কয়দিন চুপ ছিলাম একটা কারণে। চুপ থাকায় বিভিন্ন ইস্যু এখন তৈরি করা হচ্ছে। দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হচ্ছে। কেউ দলের উল্টা দিকে থেকে হেঁটে ক্ষতি করছে, কেউ দলে থেকে ক্ষতি করছি। তাই আজকে ভাবলাম কথা বলাটা একদম উচিত। সামনে যেদিন আসছে, কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। ছাত্রলীগের মনে কষ্ট দিয়েন না। দুঃসময়ে তারাই এগিয়ে এসেছিল। নির্বাচন ধমক দিয়ে হয় না। একে অপরকে দোষারোপ করে নির্বাচন হয় না। সব রাগ অভিমান ছেড়ে দিয়ে কাজ করতে হবে। সবার ঘরে ঘরে যেতে হবে। এই ঘাঁটি নৌকার, এ মাটি আওয়ামী লীগের। জয় আমাদের হবেই।

তৈমুর আলম খন্দকারকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান আরো বলেন, আপনি আপনার মত কাজ করেন। হাতি দিয়ে নৌকা ডুবায় দেবেন তা কিন্তুু হবে না। হাতিকে নৌকায় উঠতে দেব না। নৌকায় ওঠার আগেই হাতি কাঁধে উঠিয়ে দৌড় দেবো। নারায়ণগঞ্জে জামায়াত-বিএনপির অত বড় শক্তি নাই, নৌকাকে ডুবানোর।

তিনি আরো বলেন, গত ৭/৮ বছর ধরে একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমার জীবনে আমি এত কাঁদিনি তবে, কবরস্থানের ঘটনায় আমি অনেক দুঃখ পেয়েছি। আমি আশা করেছিলাম অন্তত একটি তদন্ত কমিটি হবে, তা না হয়ে বরং আমার বিরুদ্ধে প্রেস রিলিজ দিচ্ছে। এটাও তাদের কথায় যারা লিফলেটে নৌকা না লিখে প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছে। আমার দায়িত্ব আমার নেত্রীকে ফলো করা। কেউ বলে শান্তি পেলে পাক, তাতে আমার কিছু আসে না। উনি কী বলছেন সেটা তার ব্যাপার। যারা নির্বাচন পরিচালনা করেছেন, আমার জাতীয় পর্যায়ের নেতারা এসে নির্বাচন পরিচালনা করছেন। তারা বলেছেন, এটা বিএনপি-জামায়াতের নতুন চাল। এখন আমি কারটাকে সঠিক বলবো। আগামী ১৬ তারিখ নৌকার বিজয়ী হওয়ার পর আমি সেই প্রশ্নের উত্তর দেব। ১৬ তারিখ খেলা হবে। কারো ইচ্ছা হলে আমাকে গডফাদার বলতে পারেন। কেউ ব্রাদার বলতে চাইলে তা ও বলতে পারেন। আবার কেই ফাদার বললে বলতে পারেন, তবে মাদার বইলেন না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি চন্দন শীল, সেক্রেটারি খোকন সাহা, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এড. ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদাউস জুয়েল, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহসিন মিয়া, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সাধারন সম্পাদক শওকত আলী, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি মানু, এনায়েতনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান, বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ গাজী সালাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।