রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ ২৪ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার সকলের জন্য করোনার ভ্যাকসিন নিশ্চিত করবে। প্রথমদিকে দ্বিধা-দ্বন্ধে থাকলেও এখন সকলেই অত্যান্ত আগ্রহ ভরে এই টিকা নিচ্ছে। আমরা তিন কোটি ডোজ টিকা কিনে রেখেছি। তাছাড়াও ভারত থেকে ২০ লাখ ডোজ দিয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দেশও দিতে চাচ্ছে আমরা সবগুলো নেব যাতে করে আমরা গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সকলের জন্য এই টিকার ব্যবস্থা করতে পারি।
রবিবার (১৪ ফেব্রয়ারী) সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের খাঁনপুরস্থ কুমদিনী কমপ্লেক্রে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুমুদিনি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, করোনা মোকাবিলা করতে যা যা করা দরকার আমরা তা করে যাচ্ছি। ভ্যাকসিন দেওয়ার পরেও সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরে থাকতে হবে, হাত ধুতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছি পাশাপাশি যেন স্বাস্থ্য সুরক্ষাটা মেনে চলি। তাহলে আমরা আশা করি আমাদের দেশ থেকে এই প্রদুর্ভাব পুরোপুরি চলে যাবে। যখন রিসার্চ চলছিল তখন আমরা এই ভ্যাকসিন অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছি এই কারণেই যেন শুরুতেই আমরা টিকাটা পেতে পারি। বাংলাদেশ অনেক ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। কাজেই আমাদের দেশের মানুষের সুরক্ষা তাছাড়া যারা চিকিৎসা দিচ্ছে বা মানুষের পাশে থাকছে অথবা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের সবার সুরক্ষার জন্য টিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে নার্সদের শুধু ডিপ্লোমা নার্সিং ছিল, গ্রাজ্যুশন ছিল না। ৭৫ সালের পর ২১ বছর যারা সরকার পরিচালনা করেছিল একে তো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। তারপর ক্ষমতাটা তাদের কাছে ছিল একটা ভোগের বস্তু হয়ে দাড়িয়েছিল। তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ার বস্তুু ভেবেছিল। তারা দেশের মানুষের কল্যাণ করার কথা তারা কখনও চিন্তা করে নাই। এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্যের। দেশের প্রতিটি জেলায় সরকারি অথবা বেসরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, মেডিক্যাল কলেজ করে দেওয়ারর পদক্ষেপ নিয়েছি। উন্নত মানের হাসপাতাল করে দিচ্ছি। ডাক্তার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আমাদের লক্ষ ছিল যেন আমাদের দেশের মানুষ অন্তত এই চিকিৎসাটা পায় তার ব্যবস্থা করেছি। টিকা নেওয়ারর ব্যাপারে অনেকের একটু দ্বিধা দ্বন্ধ ছিল। তবে সাহসী ভূমিকা রেখেছে আমাদের কুমুদিনী হাসপাতালে নার্স। এখন আর আমাদের কোনও সমস্যা নাই, এখন সবাই খুব আগ্রহ ভরে টিকা নিতে চলে আসছে। তিনি স্বাস্থ্য সেবায় কুমুদিনী হাসপাতালের প্রশংসা করেন।
মেডিক্যাল গবেষণা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমাদের দেশে রিসার্সের সুযোগটা খুবই কম। বিশেষ করে মেডিক্যাল সায়েন্সের রিসার্স খুব বেশি একটা হচ্ছে না। যেটা হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন। আসলে যাদের রিসার্স করার কথা তারা সকলেই ডাক্তার হয়ে রোগী দেখতে এত ব্যস্ত হয়ে পরেছে। বসে রিসার্স করা খুবই হাতে গোনা কয়জনকে আমি দেখি তাদের পাবলিকেশন এবং রিসার্স করে। ক্যানসার এমন একটা রোগ, আজকে এমন তার প্রার্দুভাব হচ্ছে, কিন্তু দুর্ভাগ্য তার যে প্রকৃত ডায়াগনোসিস করা বা সেভাবে আমাদেশের পরিবেশ, আবহাওয়া, জলবায়ুর সঙ্গে এই ক্যান্সার কিভাবে বিস্তার লাভ করে তার ওপর রিসার্স করা বা এটার চিকিৎসা করবার জন্য যে রিসার্স দরকার সেটা খুব কম হয় আমাদের দেশে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্স শেষে কুমুদিনি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্ধোধন ঘোষনা করেন।
নারায়ণগঞ্জের কুমুদিনী কমপ্লেক্রের ভিত্তি প্রস্তর অনুষ্ঠানে এ সময় অন্যান্যদের মাধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপেরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ -২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ -৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লা, জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা বারিক,কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা, পরিচালক শ্রীমতি সাহা সহ গণ্যমান্য ব্যাক্তি বর্গ।
Leave a Reply