রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ ২৪ : ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর এর উদ্যোগে “নবীন আলেম সংবর্ধনা” অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৯সেপ্টম্বর) শহরের আইএসসিএ মিলনায়তনে সকাল ১০ টায় ইসলামী ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি এম. শফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ মেহেদী হাসান এর সঞ্চালনায় উক্ত “নবীন আলেম সংবর্ধনা” অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মেধাবী ছাত্রনেতা মুহাম্মাদ আবদুল জলিল।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন: ভারত বর্ষে ইসলামের দাওয়াত পৌছেছে সাবাহায়ে কেরামের যুগেই। তখন থেকে ইসলাম এ দেশের মানুষের মনিকোঠায় স্থান করে নেয়। ইংরেজরা যখন ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজদ্দৌলাকে পরাজিত করে এদেশে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে নেয় তখন থেকেই এদেশের মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে যায়। সত্যের অতন্দ্র প্রহরী, চির স্বাধীন ওলামায়ে কেরাম এ পরাধীনতাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। তারা স্বাধীনতার পক্ষে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকেন নিরবে নিরবিচ্ছিন্নভাবে, বিরোধীতা, বিদ্রোহ ও সংগ্রামের উপর্যপরি কর্মসুচী দিয়ে অতিষ্ট করে তোলেন ক্ষমতাশীন ইংরেজ বেনিয়াদেরকে। ওলামায়ে কেরামের উপর নেমে আসে নির্যাতনের ষ্টিম রোলার। সহায়-সম্পদ হয়ে যায় বাজেয়াপ্ত। জেল-জুলুম, হত্যা নির্যাতন, দেশান্তর, দ্বীপান্তর কোন কিছুই বাদ যায়নি। কিন্ত কোন কিছুই চির সংগ্রামী ওলামায়ে কেরামকে অবদমিত করতে পারেনি। তাদের ছড়ানো স্বাধীনতার সেই চেতনা ক্রমান্বয়ে আন্দোলিত হতে থাকে সারা দেশে। বলতে গেলে দারুল উলূম দেওবন্দ ও তার আদর্শ অনুসারীরাই পরাধীনতার নিকষকালো অন্ধকারাচ্ছন্ন অমানিশায় স্বাধীনতার চেরাগ জ্বালিয়েছিলেন। জাগিয়ে তুলেছিল এদেশের মৃত প্রায় মানুষের মাঝে স্বাধীনতার প্রদীপ্ত চেতনা। ১৭৫৭ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনের পর পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় লোমহর্ষক নির্যাতনের স্বীকার হতে হয় স্বাধীনতার স্বপ্ন লালন করা ওলামায়ে কেরামকে। লাখ লাখ আলেমকে প্রকাশ্যে জবাই করে শহীদ করা হয়। সন্ত্রাস ও ভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং স্বাধীনতাকামী মুক্তিপাগল দেশবাসীর মনোবলকে ভেঙ্গে দেওয়ার মানসে দিনের পর দিন শহীদানের লাশ গাছে লটকিয়ে রাখা হয়। শেরশাহী গ্রান্ড ট্রাংক রোডের এমন কোন একটি বৃক্ষ বাকি ছিল না, যেখানে শহীদদের লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়নি। কোন আলেমকে দেখলেই তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হতো। হতাশার ঘন আমানিশা ছেয়ে ফেলে এই উপ-মহাদেশকে।
তিনি আরো বলেন : ১৭৫৭ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ২ লাখ মুসলমান শাহাদাৎ বরণ করেছিল। তাদের মধ্যে ওলামায়ে কেরামের সংখ্যাই ছিল ৫১ হাজার ৫শ জন। শুধু দিল্লিতেই ৫শ আলেমকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। ১৭৫৭ সালের ১৮ই নভেম্বর দিল্লি জামে মসজিদের আঙ্গিনায় এক দিনেই তারা ২৭ হাজার মুসলমানকে শহীদ করে। আলেমদের রক্তের বিনিময় এ দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, ওলামায়ে কেরামগণ এদেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সীমাহীন ত্যাগ ও কুরবানি স্বীকার করেছেন। ওলামায়ে কেরাম এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন। পরাধীনতার অক্টোপাসে আবদ্ধ মৃত প্রায় এদেশের মানুষকে।
উক্ত “নবীন আলেম সংবর্ধনায়” আরও উপস্থিত ছিলেন, দ্বীনি সংগঠন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুহাম্মাদ মাসুম বিল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জননেতা মাওলানা মুহাম্মাদ শামসুল আলম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ ওমর ফারুক, ইশা ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সহ-সভাপতি আহমাদ কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ.এম.মিরাজুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুহাম্মাদ ওমর ফারুক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইন, দফতর সম্পাদক এইচ.এম শাহীন আদনান, কওমী মাদ্রাসা বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ আবুল হাসান, আলীয়া মাদ্রাসা বিষয়ক সম্পাদক এইচ.এম আবদুর রাজ্জাক, কলেজ সম্পাদক মুহাম্মাদ সোহেল হোসাইন, স্কুল সম্পাদক এম.এম জাহিদুল ইসলাম, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ তারেক হাসান, সদস্য মুহাম্মাদ ইফতি আলম সহ মহানগর মজলিসে শুরার দায়িত্বশীলবৃন্দ।