আইনের শাসন না থাকলে মানুষ নিরাপদ থাকতে পারে না – সুলতানা কামাল

রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ ২৪ : সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, আনুষ্ঠানিক ভাবে ত্বকী হত্যার বিচার এখনও  হয়নি, কিন্তু বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিবেকবান, সংবেদনশীল মানুষের মনে এর বিচার হয়ে গেছে।

শুক্রবার(৮মার্চ) বিকেলে শহরের ডিআইটি এলাকায় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ষষ্ঠ বার্ষিকী উপলক্ষে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সুলতানা কামাল আরো বলেন, বর্তমানে শিশু হত্যার বিচার স্বাভাবিক ভাবে হয় না। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সাহসী, সফল রাষ্ট্রনায়ক আমাদের প্রধানমন্ত্রীও এই হীন গুন্ডা প্রকৃতির মানুষদের ধরতে পারে না, ধরার সাহস দেখাতে পারেন না। শুধু নারায়ণগঞ্জবাসী নয় সবাই ত্রাসের রাজত্বে বসবাস করছে মানুষ। মুক্তিযুদ্ধ করার উদ্দেশ্য ছিলো ত্রাসের রাজত্ব, নিপীড়ন থেকে বেরিয়ে এসে মর্যাদা নিয়ে বাঁচা। তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা আরো বলেন, ক্ষমতাসীন দল মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবি করে ক্ষমতা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই দলও একটি শিশু হত্যার বিচার করতে পারেনা। জ্বালাও পোড়াও এবং বাঁধা সৃষ্টিকারী রাজনীতির পক্ষে আমরাও নই। সমস্ত প্রশাসন ও আমলারা বর্তমান সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকার পরেও ত্বকী হত্যার বিচার হচ্ছেনা। দেশরত্ন খেতাব যাকে দেয়া হয় তার আমলে একটা শিশু হত্যার বিচার চাইতে এতো কাঁকুতি, মিনতি, আঁকুতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে কেন? আইনের শাসন না থাকলে মানুষ নিরাপদ থাকতে পারে না। সেদেশে মানুষ বেআইনী কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর তখনই নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মতো ঘটনা ঘটে। সেটার বিচারের একটি পর্যায় শেষ হয়েছে, বাকিটুকু সমাপ্তি ঘটলো কিনা সেটিও আমরা দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুলতানা কামাল বলেন, নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি মানুষ জানতে চায় আসলেই তিনি এর বিচার চান কিনা!

এ সময় সুলনাতা কামাল প্রশ্ন রেখে আরো বলেন, উন্নয়নের এতো ফিরিস্তি তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু আমরা কি দাবি করতে পারি, আমরা সভ্য হয়েছি, সভ্য সমাজে বসবাস করছি, আইনের শাসন আছে, অধিকার সুরক্ষিত হয়? এসব দাবি আমরা করতে পারছিনা। ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে সংহতি জানিয়ে এই হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আছি এবং থাকবো।

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম, সাবেক সভাপতি হালিম আজাদ, খেলাঘর আসর নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের জেলার সমন্বয়ক নিখিল দাস, নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিকী, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, ন্যাপ ও নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, গণসংহতির জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন সহ প্রমূখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।